Banshi Poem Lyrics In Bengali | Bashi Kobita Rabindranath Tagore
Full Banshi Poem Lyrics In Bengali by Rabindranath Tagore বাঁশি কবিতা / বাঁশি কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Full Original Banshi Poem – কিনু গোয়ালার গলি – দোতলা বাড়ির লোহার-গরাদে-দেওয়া একতলা ঘর পথের ধারেই, লোনা-ধরা দেওয়ালেতে মাঝে মাঝে ধসে গেছে বালি, মাঝে মাঝে স্যাঁতা-পড়া দাগ। নিচে বাঁশি কবিতাটির পুরো লিরিক্স দেওয়া হলো এবং তার সাথে এই কবিতা সম্বন্ধে কিছু কথা/তথ্য সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
Banshi Poem by Rabindranath Tagore Lyrics | বাঁশি কবিতা
বাঁশি হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক রচিত একটি কবিতা, যা “পুনশ্চ” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। এই কাব্যগ্রন্থে ৫০ টি কবিতা রয়েছে এবং এটি ১৯৩২ খ্রীস্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নতুন শৈলীতে এই কাব্যগ্রন্থে গদ্যরূপে কবিতা লিখেছেন। এটি জীবন এবং মৃত্যু সম্পর্কিত মানুষের সমস্যা নিয়ে রচিত।
এই “পুনশ্চ” কাব্যগ্রন্থে থাকা কবিতাগুলি হল:-
১. কোপাই, ২. নাটক, ৩. নূতন কাল, ৪. খোয়াই, ৫. পত্র, ৬. পুকুর-ধারে, ৭. অপরাধী, ৮. ফাঁক, ৯. বাসা, ১০. দেখা, ১১. সুন্দর, ১২. শেষ দান, ১৩. কোমল গান্ধার, ১৪. বিচ্ছেদ, ১৫. স্মৃতি, ১৬. ছেলেটা, ১৭. সহযাত্রী, ১৮. বিশ্বশোক, ১৯. শেষ চিঠি, ২০. বালক, ২১. ছেঁড়া কাগজের ঝুড়ি, ২২. কীটের সংসার, ২৩. ক্যামেলিয়া, ২৪. শালিখ, ২৫. সাধারণ মেয়ে, ২৬. একজন লোক, ২৭. খেলনার মুক্তি, ২৮. পত্রলেখা, ২৯. খ্যাতি, ৩০. উন্নতি, ৩১. ভীরু, ৩২. তীর্থযাত্রী, ৩৩. চিররূপের বাণী, ৩৪. শুচি, ৩৫. রঙরেজিনী, ৩৬. মুক্তি, ৩৭. প্রেমের সোনা, ৩৮. স্নানসমাপন, ৩৯. প্রথম পূজা, ৪০. অস্থানে, ৪১. ঘরছাড়া, ৪২. ছুটির আয়োজন, ৪৩. মৃত্যু, ৪৪. মানবপুত্র, ৪৫. শিশুতীর্থ, ৪৬. শাপমোচন, ৪৭. ছুটি, ৪৮. গানের বাসা, ৪৯. পয়লা আশ্বিন, ৫০. বাঁশি
Banshi Poem by Rabindranath Tagore In Bengali Lyrics | Bashi Kobita Rabindranath Tagore
কবিতা: বাঁশি
কাব্যগ্রন্থ: “পুনশ্চ”
ভাষা: বাংলা
প্রকাশিত: ১৯৩২ খ্রীস্টাব্দে
লেখক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
লেখকের জন্ম: ৭ মে ১৮৬১
লেখকের মৃত্যু: ৭ আগস্ট ১৯৪১
লেখকের ছদ্মনাম: ভানুসিংহ ঠাকুর (ভণিতা)
লেখকের নোবেল পুরস্কার: ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে
আরো পড়ুন:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী
Banshi Poem by Rabindranath Tagore Lyrics
কিনু গোয়ালার গলি।
দোতলা বাড়ির
লোহার-গরাদে-দেওয়া একতলা ঘর
পথের ধারেই।
লোনা-ধরা দেওয়ালেতে মাঝে মাঝে ধসে গেছে বালি,
মাঝে মাঝে স্যাঁতা-পড়া দাগ।
মার্কিন থানের মার্কা একখানা ছবি
সিদ্ধিদাতা গণেশের
দরজার ‘পরে আঁটা।
আমি ছাড়া ঘরে থাকে আরেকটা জীব
এক ভাড়াতেই,
সেটা টিকটিকি।
তফাত আমার সঙ্গে এই শুধু,
নেই তার অন্নের অভাব।
বেতন পঁচিশ টাকা,
সদাগরি আপিসের কনিষ্ঠ কেরানি।
খেতে পাই দত্তদের বাড়ি
ছেলেকে পড়িয়ে।
শেয়ালদা ইস্টিশনে যাই,
সন্ধেটা কাটিয়ে আসি,
আলো জ্বালাবার দায় বাঁচে।
এঞ্জিনের ধস্ ধস্,
বাঁশির আওয়াজ,
যাত্রীর ব্যস্ততা,
কুলি-হাঁকাহাঁকি।
সাড়ে দশ বেজে যায়,
তার পরে ঘরে এসে নিরালা নিঃঝুম অন্ধকার।
ধলেশ্বরীনদীতীরে পিসিদের গ্রাম।
তাঁর দেওরের মেয়ে,
অভাগার সাথে তার বিবাহের ছিল ঠিকঠাক।
লগ্ন শুভ, নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেল–
সেই লগ্নে এসেছি পালিয়ে।
মেয়েটা তো রক্ষে পেলে,
আমি তথৈবচ।
ঘরেতে এল না সে তো, মনে তার নিত্য আসাযাওয়া–
পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর।
বর্ষা ঘন ঘোর।
ট্রামের খরচা বাড়ে,
মাঝে মাঝে মাইনেও কাটা যায়।
গলিটার কোণে কোণে
জমে ওঠে পচে ওঠে
আমের খোসা ও আঁঠি, কাঁঠালের ভূতি,
মাছের কান্কা,
মরা বেড়ালের ছানা,
ছাইপাঁশ আরো কত কী যে!
ছাতার অবস্থাখানা জরিমানা-দেওয়া
মাইনের মতো,
বহু ছিদ্র তার।
আপিসের সাজ
গোপীকান্ত গোঁসাইয়ের মনটা যেমন,
সর্বদাই রসসিক্ত থাকে।
বাদলের কালো ছায়া
স্যাঁৎসেঁতে ঘরটাতে ঢুকে
কলে-পড়া জন্তুর মতন
মূর্ছায় অসাড়।
দিন রাত মনে হয়, কোন্ আধমরা
জগতের সঙ্গে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে আছি।
গলির মোড়েই থাকে কান্তবাবু,
যত্নে-পাট-করা লম্বা চুল,
বড়ো বড়ো চোখ,
শৌখিন মেজাজ।
কর্নেট বাজানো তার শখ।
মাঝে মাঝে সুর জেগে ওঠে
এ গলির বীভৎস বাতাসে–
কখনো গভীর রাতে,
ভোরবেলা আধো অন্ধকারে,
কখনো বৈকালে
ঝিকিমিকি আলোয় ছায়ায়।
হঠাৎ সন্ধ্যায়
সিন্ধু-বারোয়াঁয় লাগে তান,
সমস্ত আকাশে বাজে
অনাদি কালের বিরহবেদনা।
তখনি মুহূর্তে ধরা পড়ে
এ গলিটা ঘোর মিছে,
দুর্বিষহ, মাতালের প্রলাপের মতো।
হঠাৎ খবর পাই মনে
আকবর বাদশার সঙ্গে
হরিপদ কেরানির কোনো ভেদ নেই।
বাঁশির করুণ ডাক বেয়ে
ছেঁড়াছাতা রাজছত্র মিলে চলে গেছে
এক বৈকুণ্ঠের দিকে।
এ গান যেখানে সত্য
অনন্ত গোধূলিলগ্নে
সেইখানে
বহি চলে ধলেশ্বরী;
তীরে তমালের ঘন ছায়া;
আঙিনাতে
যে আছে অপেক্ষা ক’রে, তার
পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর।